,

মাধবপুরে ১০ গ্রামের একমাত্র রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা :: চলাচলের অযোগ্য

মাধবপুর প্রতিনিধি : মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী বাজার-জয়পুর মসজিদ বাজার (বড়জ্বালা মোড়) রাস্তার উপরিভাগে বড়-বড় গর্ত। পিচ আর খোয়া উঠে গোটা সড়ক লাল বর্ণ ধারণ করেছে। দুই বছর আগে থেকেই চলাচলের প্রায় অযোগ্য হলেও অনেকটা বাধ্য হয়েই মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন।
রাজনগর গ্রামের স্কুলশিক্ষক ইসকান্দর মীর্জা ফারুক মাষ্টার জানান, চৌমুহনী বাজার থেকে জয়পুর মসজিদ বাজারের (বড়জ্বালা মোড়) এই রাস্তাটি প্রায় ১ যুগ পূর্বে নির্মাণ করে মাধবপুর উপজেলা এলজিইডি। সে সময় কাচা রাস্তার প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ করা হলেও এই ১ যুগেও কোনো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। গোটা সড়কজুড়ে ক্ষত-বিক্ষতের চিত্র। মনে হচ্ছে কোনো যুদ্ধক্ষেত্র।
চৌমুহনী ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম ভুট্টু জানান, রাস্তাটি এতই খারাপ যে, এখন যানবাহন তো দূরের কথা মানুষও চলাচল করতে পারে না। বর্ষার আগে রাস্তাটি মেরামত করা না হলে গ্রামের মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট পোহাতে হবে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে সড়কের কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে একটি গাড়ি আরেকটিকে অতিক্রম করতে পারছে না। সড়কটিতে তিনটি সেতুর দুই পাশের মুখেও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
আহাদ মিয়াসহ চারজন কৃষক বলেন, তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য চৌমুহনী বাজারসহ উপজেলা সদরের হাটবাজারে নিতে হয়। কিন্তু এই ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ভ্যানচালকেরা যেতে চান না। ভ্যানচালকেরা গেলেও এ জন্য অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের। দ্রুত এ সড়কটি সংস্কার করা দরকার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড়জ্বালা সীমান্ত ফাঁড়ির কয়েকজন বিজিবি সদস্য বলেন, তাদের সীমান্ত ফাঁড়িতে যাওয়ার প্রধান সড়ক এটি। এর বিকল্প একটি সড়ক থাকলেও সেটি মাটির রাস্তা। ফলে সীমান্তে কোনো ঘটনা ঘটলে এই ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে সময়মতো ঘটনাস্থলে যাওয়া যায় না।
শুক্কুর আলীসহ তিনজন ভ্যানচালক বলেন, ভাঙাচোরা রাস্তার জন্য বেশি মাল নেওয়া যায় না। এ ছাড়া ভ্যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে ভাঙাচোরা রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।
শাহজালালপুর গ্রামের বাসিন্দা কলেজ ছাত্র রেদুয়ান আহমেদ বলেন, সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য তাদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। যানবাহন বা ভ্যানে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে কষ্ট হয়, সময়ও বেশি লাগে।
চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ জানান, এই রাস্তাটি ভৌগলিক কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলা শহরের সাথে যুক্ত থাকায় রাজনগর, জয়পুর, গাজীপুর, কালিকৃষ্ণনগর, হরিণখোলা, নয়নপুর, শাহজালালপুর, চকবস্তারামনগর, সাতপাড়াসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। সড়কটির বেহাল অবস্থার বিষয়টি ইতিমধ্যে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বলা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় এলজিইডির প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, সড়কটির একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে। প্রকল্পের অনুমোদন পেলে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর